চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে সারা দেশে যত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে এর মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। আট মাসে আত্মহত্যার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এক সমীক্ষায় এসব তথ্য প্রকাশ করেছে আচল ফাউন্ডেশন। গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে ‘শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার ক্রমবর্ধমান: কোন পথে সমাধান?’ শীর্ষক সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত গবেষণায় দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহননের হার ক্রমবর্ধমান। ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ১০১ এবং ২০২২ সালে দেশে আত্মহত্যাকারী মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫৩২। এরই ধারাবাহিকতায় এই বছর দেশের ১০৫টি জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টাল থেকে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহকৃত তথ্য অনুসারে দেখা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত এই আট মাসে ৩৬১ জন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
সমীক্ষা মতে, গত আট মাসে গড়ে প্রায় ৪৫.১৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে। যেখানে স্কুল শিক্ষার্থী ১৬৯ জন, কলেজ শিক্ষার্থী ৯৬ জন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৬৬ জন এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩০ জন। ৩৬১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পুরুষ শিক্ষার্থী ছিল ১৪৭ জন। অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থী ছিল ২১৪ জন।
২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত সবচেয়ে বেশী আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে আত্মহত্যা করেছে ৩১.৩০ শতাংশ। খুলনায় ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৪.১০ শতাংশ, রংপুরে ৮.৯০ শতাংশ, ময়মনসিংহে ১০ শতাংশ, রাজশাহীতে ১১.৯০ শতাংশ ও বরিশালে আত্মহত্যা করেছে ৮.৩০ শতাংশ। এ ছাড়া সিলেটে আত্মহত্যা করেছে ২.৫ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ঢাকা শহরে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও বেড়ে উঠার সহায়ক পরিবেশ না থাকায় এখানে আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটছে।
আত্মহত্যাকারীদের বয়সভিত্তিক বিবেচনায় দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা। ৬৭.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিল এই বয়সী। এদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ছিলো ১৫৯ জন। অন্যদিকে পুরুষ শিক্ষার্থী ৮৪ জন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার ২১.৬ শতাংশ। ২৬ থেকে ৩০ বছরের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার হার ২.৮০ শতাংশ। ১ থেকে ১২ বছরের শিক্ষার্থী ছিলো ৮.৩০ শতাংশ।
আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক দল আত্মহননকারী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পেছনের কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখেছেন, শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার পিছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী অভিমান। অভিমানের কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ৩১.৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ৫৭ জন এবং সমসংখ্যক পুরুষ শিক্ষার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া আত্মহত্যা করার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছে, যেমন- প্রেমঘটিত কারণ, পারিবারিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, অ্যাকাডেমিক চাপ, মানসিক অস্থিতিশীলতা, পারিবারিক সমস্যা ও অন্যান্য।
ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করার কারণে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা কম থাকবে বলেই ধারণা ছিল। কিন্তু সেখানেও দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। গত আট মাসে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝেও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ৩৬১ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে ৩০ জন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আত্মহনন করেছে। এদের মাঝে ৫৩.৩০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী ছিল।
মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ ও সেবা পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
হাই-টেক মডার্ণ সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল
প্রধান শাখা: ১১৬, মনিপুরীপাড়া (১ নং গেইট), তেজগাঁও, ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫.
কেরাণীগঞ্জ শাখা: সারা প্যালেস (পুরাতন সিনেমা হলের পাশে), আটি বাজার, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।০১৭১১-৬৬২৭০৯,
০১৬০২-২৬৮৪০৫,
০১৬০২-২৬৮৪০৬অনলাইনে সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন