মানসিক চাপ কমাতে ভ্রমণ কেন জরুরি | হাই-টেক মডার্ণ সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল

ব্যস্ত এ জীবনে সবার কাছেই অনেক কাঙ্খিত একটি বিষয় হচ্ছে একটু অবসর পাওয়া। কিন্তু অবসর যেন সোনার হরিণ। কোন না কোন কাজ বা প্রয়োজন যখন সামনে আসে অবসর তখন সরে যায় যোজন যোজন দূরে। অবসর সময়টি মানুষ কাটায় একান্ত নিজের মতো করে। একটু অবসরে থাকতে পারা অনেক বড় একটি বিষয়। কারণ, মানুষ যখন অবসরে থাকে তখন তার ব্রেইন রিল্যাক্সে থাকে। আর ব্রেইন রিল্যাক্সে থাকলে কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও বেড়ে যায় বহুগুণে। মানুষ সবচেয়ে বেশি রিল্যাক্স থাকে ভ্রমণের সময়ে। ভ্রমণের সময়ে দেহ-মনে যোগ হয় বাড়তি আনন্দ। একটু সময় নিয়ে ভ্রমণ করতে পারলে তা শরীর-মনকে রাখে উৎফুল্ল।

ভ্রমণ মানুষকে সুস্থ রাখে। শরীর ও মন উভয় উজ্জীবিত হয়। অন্তত গবেষণা তা–ই বলছে। এ জন্য বিরতিহীন পরিশ্রম না করে ছুটি নিয়ে নতুন জায়গা থেকে ঘুরে এলে বাড়বে কাজের উৎসাহ।

২০২১ সালে প্রকাশিত ট্যুরিজম অ্যানালাইসিসের একটি জার্নালে বলা হয়েছে, যারা নিয়মিত ভ্রমণে যান, তারা না যাওয়া বা কম ভ্রমণে যাওয়া মানুষের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি সুখী হন। এ ছাড়া উইসকনসিন মেডিকেল জার্নালে প্রকাশ, ১ হাজার ৫০০ নারীর ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্রমণকারীরা হতাশা ও বিষণ্ণতায় কম ভোগেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি গবেষণার তথ্য বলে, সারা বিশ্বে ২০১৬ সালে ৭ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ হৃদরোগ ও স্ট্রোকে মারা গেছেন, যার প্রধান কারণ, ছুটি ছাড়াই অতিরিক্ত কাজ। তাদের গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সপ্তাহে ৫৫ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে হার্টের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে ৩৫ শতাংশ। আর সপ্তাহে ৩৫ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজের মধ্যে থাকলে এই হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ১৭ শতাংশ।

ভ্রমণ থেকে দীর্ঘদিনের বিরতি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। তাই আসুন জেনে নেই মানসিক চাপ কমাতে ভ্রমণ কেন এতো জরুরি?

কেন ভ্রমণ করবেন?

ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছা হয় বলেই কিন্তু আমরা কেন ভ্রমণ করি। শরীর এবং মনের প্রফুল্লতা অর্জনের জন্যও ভ্রমণ করি। যেহেতু রোমাঞ্চকর স্থানে সময় কাটানো ভালোলাগার একটি বিষয় পাশাপাশি মনেও আনে স্বস্তি। আর ভ্রমণেরও রয়েছে নানান রকমের উপকারিতা। ভ্রমণে যে যে উপকারিতা আছে-

ভ্রমণে মানসিক চাপ কমেঃ

আমরা যখনই কোনো বিপদ অনুমান করতে পারি, শরীরে কর্টিসল ও এপিনেফ্রিনের মতো স্ট্রেস হরমোন তৈরি হয়। এ ছাড়া আমাদের প্রতিদিনের চাপময় জীবনের কারণেও এই হরমোন তৈরি হয়। আর দীর্ঘদিন এমন হতে থাকলে বাড়তে থাকে বিষণ্নতা, ওজন ও নিদ্রাহীনতা। এ ধরনের বিষন্নতা ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তিও কমিয়ে দেয়, যা আপনার নৈমিত্তিক কাজের জন্য মোটেও ভালো নয়। এ জন্য ভ্রমণের ভালো দিক হলো, তা শরীরে তৈরি হওয়া স্ট্রেস হরমোনের পরিমাণ কমায়; যা সম্ভাব্য সমস্যাগুলোর সমাধানের পথ সহজ করে। আবার কাজের মনোযোগও বাড়ায়। তাই ভ্রমণ মানসিক চাপ কমানো এবং নিজেকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য খুবই ভালো উপায়। ছুটির সময়টা বাড়ির বাইরে গিয়ে কাটান। দেখবেন আপনি দৈনন্দিন ঝামেলা থেকে দূরে থাকবেন। ছুটি শেষে যখন ঘরে ফিরবেন; তখন একটা সতেজ বোধ এবং অনুপ্রেরণা কাজ করবে।

মনে বাড়ায় আনন্দঃ

ভ্রমণের সময়ে আপনার মন সাধারণ একটি দিনের থেকে অনেক বেশি ভালো থাকে। আর এই আনন্দ বাড়ে ভ্রমণ পরিকল্পনার সময় থেকেই। কিন্তু দীর্ঘদিন শুধু পরিকল্পনার করতে থাকলে আবার এর পরিমাণ কমতে শুরু করে। পরিকল্পনার কিছুদিনের মধ্যেই ভ্রমণে চলে গেলে যথাযথভাবেই এই আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব।

সুন্দর করে সম্পর্কঃ

যে কোন সম্পর্কে মানসিক চাপ বেশ প্রভাব ফেলে। এর প্রভাবে সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো এবং কথা বলার ইচ্ছা কমতে থাকে। ভ্রমণে গেলে নতুন স্থানের প্রভাব পড়ে। কমে মানসিক চাপ। সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটাতে ও বিভিন্ন বিষয়ে গল্পে বাড়ে উৎসাহ।

বৃদ্ধি করে সামাজিক যোগাযোগঃ

ভ্রমণে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ হয়। আপনার পাশে বসা মানুষটির সঙ্গে আলাপ হতে পারে। এতে আপনার সামাজিক দক্ষতা ও যোগাযোগ বাড়বে। অনেকেই আবার নতুন পরিবেশে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। এমন সমস্যায় ভ্রমণ হতে পারে ভালো সমাধান।

ভালো রাখে হৃদযন্ত্রঃ

বিভিন্ন রকম গবেষণায় পাওয়া গেছে ভ্রমণ হৃদযন্ত্রের জন্য বেশ উপকারী। নিয়মিত কম বা বেশি দিনের ভ্রমণে যাওয়া সম্ভব হলে রক্তে খারাপ কোলেস্টরলের পরিমাণ কমতে শুরু করে। তথ্য আরও বলে, বছরের বেশি সময় যারা বাসাতেই থাকেন, অথবা যারা কোথাও ভ্রমণ করতে নিরুৎসাহিত বোধ করেন তারাই এ ধরনের অসুখে বেশি ভোগেন।

ভ্রমণ শারীরিক অসুস্থতা কমায়ঃ

অতিরিক্ত কাজ বা পরিশ্রম মানুষের অ্যাড্রিনাল সিস্টেমকে চাপে ফেলে দেয়। ভ্রমণ অ্যাড্রিনালিন হরমোনের নিঃসরণকে স্বাভাবিক রাখে। ফলে আমাদের শরীর ও মন ভালো থাকে। অন্যদিকে মানসিক চাপ এই হরমোণের নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে।

মনোযোগ বাড়ায়ঃ

একটানা কাজে আপনার মস্তিষ্কের কার্যকরিতা কমে যায়। এতে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া অতিরিক্ত চাপে স্মৃতিশক্তিও কমতে থাকে ধীরে ধীরে। অন্যদিকে ভ্রমণে আসে মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন। ভ্রমণের পর আপনি আরও বেশি মনোযোগী ও উৎসাহিত অনুভব করবেন, যা বাড়াবে কার্যক্ষমতা।

ধৈর্যশীলতা বৃদ্ধিতে ভ্রমণ অতুলনীয়ঃ

ঘোরাঘুরি করতে গেলে আপনাকে আরো বেশি ধৈর্যশীল হতে হবে। চাওয়ামাত্রই সব হয়তো হাতের কাছে চলে আসবে না। কেননা বের হলেই দেখবেন, কোনো কিছুর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। খাবারের জন্য রেস্টুরেন্টে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এসব পরিস্থিতি আপনাকে সামাল দিতে হবে। মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। আর এসব ধৈর্য ধারণ করে এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই মানসিক চাপ কমে যাবে।

ভ্রমণে বাড়ে ইতিবাচক চিন্তাঃ

ভ্রমণ আপনাকে লক্ষ্য অর্জনেও সাহায্য করবে। ভ্রমণ করলে আপনি কিছুটা ইতিবাচক চিন্তার অধিকারী হবেন। মনে করুন, পাহাড়ে ওঠার লক্ষ্য অর্জন করলে আপনি হয়তো আবার একটি লক্ষ্য ঠিক করে নিবেন। এভাবে লক্ষ্য অর্জন আপনাকে দিতে পারে আত্মবিশ্বাস এবং সফলতা।

ভ্রমণে মানসিকতার উন্নতি ঘটেঃ

বেড়াতে গেলে মানসিকতার উন্নতি ঘটে। অনেকসময় খারাপ আবহাওয়ায় ভ্রমণের তারিখ পরিবর্তন হতে পারে। তখন নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এসবই আপনাকে অনেক নমনীয় করে তুলবে। আরো বেশি মুক্তমন তৈরি করে দেবে। এসবই আপনার দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগবে।

ভালো ঘুমের উৎকৃষ্ট দাওয়াই হচ্ছে ভ্রমণঃ

অতিরিক্ত কাজ আপনার ঘুমের পরিমাণ কমায়, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ কমায় আর হতাশা তৈরি করে। শরীরে স্বাভাবিকভাবেই তৈরি হয় ক্লান্তি। কিন্তু ভ্রমণ পরিকল্পনা করা থেকেই আপনার ঘুমের সমস্যা কমতে শুরু করে। ভ্রমণে যাওয়ার আগে ও ভ্রমণ থেকে আসার পরও ভালো ঘুমের সুফল পাওয়া যাবে।

ভ্রমণ বাড়ায় জীবনীশক্তিঃ

গবেষণা বলে, ভ্রমণে বাড়ে জীবনীশক্তি। এর প্রধান কারণ, ভ্রমণ মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ ও সুন্দর রাখে। কমে মানসিক চাপ, হতাশা ও বিষণ্নতা। এ সবই বেঁচে থাকার আনন্দ বাড়ায়।

জনস্বার্থে-
হাই-টেক মডার্ণ সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল
মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগের অনন্য চিকিৎসা কেন্দ্র
যেকোন তথ্যে ও সিরিয়ালের জন্য যোগাযোগ করুন।

One Comment
  1. Reply
    e-commerce

    Wow, wonderful weblog structure! How lengthy have you been blogging for? you made running a blog look easy. The entire look of your website is great, let alone the content!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Hi-Tech Modern Psychiatric Hospital. Branch-1: 116, Monipuripara (1 No Gate), Tejgaon, Farmgate, Dhaka-1215. Branch-2: Sara Palace (Beside Old Cinema Hall), Ati Bazar, Keraniganj, Dhaka.

Call Us Now at

Call Us Now at

01711-662709, 01602-268405, 01602-268406

Email Us at

Email Us at

modernhospital2014@gmail.com

Twitter
YouTube
LinkedIn
Share