কীভাবে গড়ে তুলবেন, ধরে রাখবেন দু’জনের সম্পর্ক? | হাই-টেক মডার্ণ সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল

বন্ধুত্ব, বিয়ে বা একসাথে থাকা – যা-ই হোক, দুজন মানুষের মধ্যে একটি সম্পর্ক হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক জিনিসগুলোর একটি।

তবে এটা গড়ে তুলতে পারাটা কিন্তু হতে পারে সবচেয়ে কঠিন জিনিসগুলোর একটি। একটা সম্পর্ক কি ভাবে গড়ে ওঠে এর কোন বাঁধাধরা ফর্মূলা নেই।

তবে কিভাবে একটা সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়, বা টিকিয়ে রাখা যায় – তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ থেকে তো আমরা লাভবান হতেই পারি।

ঝগড়াঝাঁটি-সংঘাতকে ভয় পাবেন না

ঝগড়া-সংঘাত-বিবাদকে আপনি কিভাবে মোকাবিলা করছেন সেটাই আসল কথা। নিজের স্বাতন্ত্র্যকে প্রকাশ করতে গেলে কিছু মতপার্থক্য হতেই পারে। কিন্তু বন্ধুত্ব বা সম্পর্কের মধ্যেএরকম সংঘাত যে খুব খারাপ জিনিস তা সবসময় ঠিক নয়। অনেক সময়ই দুজনের মধ্যেকার ভিন্নতা সম্পর্ককে আরো মজবুত করে। অন্যের অনুভুতিকে বুঝতে পারাকে বলা যায় এমপ্যাথি -এবং বিশেষজ্ঞদের কথায়, এটা সংঘাত নিষ্পত্তির জন্য সবচেয়ে জরুরি জিনিস। অন্যজন কি ভুল করছে সেটা না ভেবে বরং নিজেকে প্রশ্ন করুন: আমি কি ভুল করছি এবং আমি কি ভাবে নিজেকে বদলাতে পারি?

নিজের স্বাতন্ত্র্যকে টিকিয়ে রাখুন

একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তার মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলা খুব সহজ। কিন্তু আসলে নিজের জন্য কিছু সময় রাখা এবং আপনার সঙ্গীকে তার নিজের একটা জায়গা দেয়া (পার্সোনাল স্পেস) খুবই গুরুত্বপূর্ণ । আপনার নিজের শখ. আগ্রহের জায়গাগুলো ধরে রাখুন। আপনার কাছে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হারিয়ে যেতে দেবেন না।

কিছু সময় আলাদা কাটান। তাহলে একে অপরের সাথে যে সময়টা কাটাবেন তা মধুর হয়ে উঠবে। একে অপরকে এড়িয়ে চলা নয়, বরং একটি স্বাস্থ্যকর এবং পরিণত সম্পর্ক গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।

দু’জনে মিলে আনন্দ করুন

‘একসঙ্গে সুন্দর সময় কাটানো’ কথাটা পুরোনো, কিন্তু মূল্যবান কথা। আপনাদের সম্পর্ক মানে শুধু একসাথে বাজারে যাওয়া আর ঘরদোরের আবর্জনা পরিষ্কার রাখা নয়। কিছু সময় রাখুন একে অপরের সঙ্গ উপভোগ করার জন্য, উত্তেজনাপূর্ণ কিছু করার জন্য, সেটাএকসাথে খেতে যাওয়াই হোক, কোথাও বেড়াতে যাওয়াই হোক বা বিছানায় একটা অলস সকাল কাটানোই হোক। সপ্তাহের একটা দিন নির্দিষ্ট করে ফেলুন ব্যস্ত বন্ধুদের সাথে কাটানোর জন্য। যেমন ধরুন, মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবার রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া, বা একটা ক্যাম্পিং ট্রিপের দিন।

দু’জনের যোগাযোগ হতে হবে স্পষ্ট, পরিষ্কার করে জানান আপনি কি বলতে চান।

অনেক তর্কাতর্কিই হয় শুধু একটি কারণে – ভুল বোঝাবুঝি। এই বিরক্তি, হতাশা এবং ঝগড়া এড়াতে হলে নিজের যা বলবার – সেই কথাটা পরিষ্কার করে বলুন। একটা এসএমএস বা ইমেইল পাঠানোর আগে আরেকবার পড়ে নিন, আপনি যা বলতে চান তা কি স্পষ্ট করে বলা হয়েছে? দেখে নিন। সন্দেহ থাকলে মুখোমুখি কথা বলুন, বা স্কাইপ/ফেসটাইম ব্যবহার করুন।

এই একজনই আমার ‘সবকিছু’ – এমন চিন্তা বাদ দিন

আমরা স্বামী বা স্ত্রী, বা সঙ্গীর ওপর অনেক সময়ই অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করি। আমরা চাই, সে হবে আমার ক্রাচের মতো – আমার সমস্যার সময় আমি যার ওপর ভর করে চলবো। আরো চাই যে ‘সে’ হবে আমার প্রেমিক, বন্ধু, সহগামী, গোপন কথা বলার লোক, এবং অর্থনৈতিক নির্ভরতাও দেবে সে। এর কোনো একটাতে সে ব্যর্থ হলেই আমরা পুরো সম্পর্ক নিয়েই প্রশ্ন তুলে বসি। আসলে তা নয়। স্বামী বা স্ত্রী বা জীবনসঙ্গী – নিশ্চয়ই একজনের মূল সম্পর্ক, কিন্ত ‘একমাত্র’ নয়। এটা বোঝা দরকার কখন আপনি একজন বন্ধুর কাছে যাবেন, কখন পরিবারের একজনের কাছে যাবেন, কোনো কারণে কাঁদতে হলে কার কাঁধে মাথা রাখবেন। সবকিছুর জন্যে পার্টনারকে কাজে লাগাবেন – এমন আশা করবেন না।

সুন্দর মুহূর্তগুলো উদযাপন করুন

জীবন সব সময়ই আনন্দের নয়, কঠিন মুহূর্ত সবারই আসে। সুতরাং যখন আনন্দের সুযোগ আসে, তখন তা উদযাপন করুন । আপনার বন্ধুর সন্তান হলে, বা সঙ্গীর পদোন্নতি হলে আনন্দ উৎসবের আয়োজন করুন। এসব আপনাদের পরস্পরের আরো কাছাকাছি আসার জন্য সহায়ক হয়, খারাপ সময়গুলো পার হয়ে যাওয়া সহজ হয়।

নিজের দুশ্চিন্তা, ভয়গুলো শেয়ার করুন

ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে হলে নিজেকে উন্মুক্ত করতে হয়। আপনি যদি আপনার দুর্বলতা, ভয়, দুশ্চিন্তাগুলো অপরজনকে জানতে দেন, তার সহায়তা চান, – তাহলে অন্যজনও তাই করবে।

একজন গবেষক বলেছেন. “হাজার হাজার লোকের সাক্ষাতকার নিয়ে আমি এই সিদ্ধান্তেই পৌঁছেছি যে – পরস্পরের দুর্বলতাগুলো বিনিময় না করলে কখনো শারীরিক-মানসিক-আত্মিক ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় না।

লেনার্ড কোহেনের বিখ্যাত উক্তি মনে করুন: ‘আলো সবসময়ই ঢোকে ফাটল দিয়ে।’

অন্যের প্রতি দয়া, সহমর্মিতা দেখান

আমরা অনেক সময়ই নিজের প্রিয়জনকে এমনভাবে নিই যেন ‘ও তো আছেই’ ।

তা না করে একে স্বীকৃতি দিন, অন্যজনের প্রতি সদয় হোন, এবং অন্যজন যখন সেটা করছে তখন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।

আপনি যখন কারো কথা ভাবছেন, তাকে এসএমএস বা ইমেল করে তা জানতে দিন।

আপনার বন্ধুর যদি জরুরি কোন ডাক্তারের এ্যাপয়েন্টমেন্ট থেকে থাকে, বা অফিসে কোন কঠিন দায়িত্ব পড়ে, জানতে চান যে তাতে কি হলো, কেমন হলো।

বন্ধু যদি অসুস্থ হন, তাকে একটা ‘গেট ওয়েল সুন’ কার্ড পাঠান, তার আরোগ্য কামনা করুন।

এরকম ছোট ছোট জিনিসগুলো সম্পর্ককে অনেকদূর এগিয়ে দেয়।

‘আমি কি আমার স্বপ্নের মানুষকে পেয়েছি?’ – এরকম ভাবনা নিয়ে হয়রান হবেন না

এসব কথা আজকালকার যুগে খুব চালু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আধুনিক মানুষ এ ভাবনা নিয়ে হয়রান হয়, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে যে – “এত মানুষকে আমি চিনি, যে কিভাবে জানবো, আমি যাকে খুঁজছি তাকে পেয়েছি কিনা ।” সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এসথার পেরেল বলছেন, সত্যি কথা হচ্ছে যে আসলে এটা জানা অসম্ভব। আমাদের মনে রাখতে হবে যে স্বপ্নের সেই ‘এক এবং অদ্বিতীয়’ বলে কেউ নেই। আছে একজনই – যাকে আপনি বেছে নিয়েছেন সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য। তার সাথে কেমন সম্পর্ক আপনি গড়ে তুলতে পারলেন – সেটাই আসল কথা। আপনি কি তার সাথে মানিয়ে চলতে পারছেন? আপনি কি সম্পর্কটি রক্ষা এবং বিকাশের জন্য কাজ করছেন?
নিজেকে এ প্রশ্ন করুন।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

জনস্বার্থে-
হাই-টেক মডার্ণ সাইকিয়াট্রিক হাসপাতাল
মাদকাসক্তি ও মানসিক রোগের অনন্য চিকিৎসা কেন্দ্র
যেকোন তথ্যে ও সিরিয়ালের জন্য যোগাযোগ করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Hi-Tech Modern Psychiatric Hospital. Branch-1: 116, Monipuripara (1 No Gate), Tejgaon, Farmgate, Dhaka-1215. Branch-2: Sara Palace (Beside Old Cinema Hall), Ati Bazar, Keraniganj, Dhaka.

Call Us Now at

Call Us Now at

01711-662709, 01602-268405, 01602-268406

Email Us at

Email Us at

modernhospital2014@gmail.com

Twitter
YouTube
LinkedIn
Share